আজকের এই আর্টিকেলে আমরা সোনালী ব্যাংক শিক্ষা বৃত্তি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব। এখানে আপনি জানবেন এই বৃত্তির উদ্দেশ্য, ২০২৫ সালের বিশেষত্ব, যোগ্যতা, আবেদন প্রক্রিয়া, প্রয়োজনীয় কাগজপত্র এবং পরিমাণ সম্পর্কে। যদি আপনি বা আপনার পরিচিত কোনো শিক্ষার্থী এই বৃত্তির জন্য যোগ্য হন, তাহলে এই তথ্যগুলো আপনার জন্য খুবই উপকারী হবে। এই বৃত্তি না শুধু আর্থিক সাহায্য দেয়, বরং শিক্ষার্থীদের আত্মবিশ্বাসও বাড়ায়। উদাহরণস্বরূপ, গত বছর অনেক শিক্ষার্থী এই সাহায্য নিয়ে তাদের পড়াশোনা চালিয়ে যেতে পেরেছে। চলুন, বিস্তারিত জেনে নিই।
সোনালী ব্যাংক শিক্ষাবৃত্তি কি
সোনালী ব্যাংক শিক্ষা বৃত্তি হলো একটি আর্থিক সহায়তা কর্মসূচি, যা সোনালী ব্যাংক পিএলসি দ্বারা পরিচালিত। এটি ব্যাংকের সিএসআর কার্যক্রমের অংশ। মূল উদ্দেশ্য হলো দরিদ্র পরিবারের মেধাবী শিক্ষার্থীদের উচ্চশিক্ষায় সাহায্য করা।
এই বৃত্তির উদ্দেশ্য
- মেধাবী শিক্ষার্থীদের আর্থিক বাধা দূর করা।
- শিক্ষার মান উন্নয়নে অবদান রাখা।
- সমাজের অসমতুল্যতা কমানো।
এই প্রোগ্রামটি প্রতি বছর চালু হয়। এটি এসএসসি বা এইচএসসি পাস করা শিক্ষার্থীদের জন্য। উদাহরণ দিই, একজন শিক্ষার্থী যদি এসএসসি পাস করে এইচএসসিতে পড়ে, তাহলে সে এই সাহায্য পেতে পারে। এতে করে শিক্ষার্থীরা তাদের লক্ষ্য অর্জনে এগিয়ে যায়।
বৃত্তির সুবিধা
- আর্থিক সাহায্য পাওয়া যায়।
- মেধা স্বীকৃতি পায়।
- ভবিষ্যতে চাকরির সুযোগ বাড়ে।
এই বৃত্তি বাংলাদেশের ৬৪ জেলায় প্রযোজ্য। এটি শিক্ষা সহায়তার একটা দারুণ উদাহরণ।
সোনালী ব্যাংক শিক্ষা বৃত্তি 2025
২০২৫ সালে সোনালী ব্যাংক শিক্ষা বৃত্তি ২০২৫ নামে পরিচিত। এটি ২০২৪ সালে এসএসসি বা এইচএসসি পাস করা শিক্ষার্থীদের জন্য। আবেদন শুরু হয়েছে ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৫ থেকে এবং শেষ হবে ১০ অক্টোবর ২০২৫।
২০২৫ সালের বিশেষত্ব
এ বছর বৃত্তিটি আরও বেশি শিক্ষার্থীকে কভার করবে। সোনালী ব্যাংকের ওয়েবসাইটে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়েছে। এটি অনলাইন আবেদন ভিত্তিক। গত বছরের মতোই, এবারও মেধা এবং কোটার ভিত্তিতে নির্বাচন হবে।
কেন ২০২৫ সালে আবেদন করবেন
এই বছরের বৃত্তি শিক্ষার্থীদের উচ্চশিক্ষায় নতুন উদ্যম দেবে। যদি আপনি ২০২৪ সালে পাস করেছেন, তাহলে এটা আপনার জন্য। উদাহরণস্বরূপ, একজন গ্রামীণ শিক্ষার্থী এই সাহায্য নিয়ে কলেজে পড়া চালিয়ে যেতে পারে।
সোনালী ব্যাংক শিক্ষা বৃত্তি পাওয়ার যোগ্যতা
সোনালী ব্যাংক শিক্ষা বৃত্তি পাওয়ার জন্য কিছু যোগ্যতা থাকতে হয়। এগুলো মূলত শিক্ষাগত এবং আর্থিক।
শিক্ষাগত যোগ্যতা
- ২০২৪ সালে এসএসসি বা সমমান পাস করে এখন এইচএসসিতে পড়ছেন।
- অথবা, ২০২৪ সালে এইচএসসি বা সমমান পাস করে স্নাতকে পড়ছেন।
- বর্তমানে এইচএসসি বা স্নাতকে অধ্যয়নরত হতে হবে।
জিপিএ প্রয়োজনীয়তা
নিচের টেবিলে বিস্তারিত দেখুন:
কোটা/ক্যাটাগরি | প্রয়োজনীয় জিপিএ (এসএসসি/এইচএসসি) |
---|---|
মেধাভিত্তিক | ৫.০০ |
বীর মুক্তিযোদ্ধা/শহীদ মুক্তিযোদ্ধা/বীরাঙ্গনার সন্তান | ৪.৫০ |
ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী | ৪.৫০ |
তৃতীয় লিঙ্গ | ৩.৫০ |
আর্থিক যোগ্যতা
- অভিভাবকের মাসিক আয় ১৫,০০০ টাকার বেশি নয়।
- এটি দরিদ্র পরিবারের জন্য বিশেষ।
যদি এই যোগ্যতা মিলে, তাহলে আবেদন করুন। এতে করে অনেক শিক্ষার্থী উপকৃত হয়।

সোনালী ব্যাংক শিক্ষা বৃত্তির জন্য আবেদন করার উপায়
আবেদন প্রক্রিয়া সহজ এবং অনলাইন ভিত্তিক।
ধাপসমূহ অনুসরণ
- সোনালী ব্যাংকের ওয়েবসাইটে যান: www.sonalibank.com.bd/csr।
- অনলাইন আবেদন ফর্ম খুঁজুন।
- ফর্মে বিস্তারিত তথ্য পূরণ করুন।
- ছবি এবং স্বাক্ষর আপলোড করুন।
- সাবমিট করুন।
প্রয়োজনীয় তথ্য প্রদান করুন
- নাম, পিতা-মাতার নাম।
- কোটা, মোবাইল নম্বর।
- শিক্ষা বিবরণ (পরীক্ষা, গ্রুপ, বছর, বোর্ড, জিপিএ)।
- বর্তমান প্রতিষ্ঠানের নাম, ক্লাস/ডিপার্টমেন্ট।
- অভিভাবকের পেশা এবং আয়।
আবেদন শেষ হলে প্রিন্ট নিন। এটি সহজ, কোনো হার্ডকপি পাঠাতে হয় না।
সোনালী ব্যাংক শিক্ষাবৃত্তির আবেদনের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র
অনলাইন আবেদনে কোনো কাগজপত্র আপলোড করতে হয় না, শুধু ছবি এবং স্বাক্ষর। কিন্তু নির্বাচিত হলে যাচাইয়ের জন্য লাগতে পারে।
সম্ভাব্য কাগজপত্রের তালিকা
- বর্তমান প্রতিষ্ঠানের সার্টিফিকেট।
- মার্কশিটের কপি।
- নাগরিকত্ব সার্টিফিকেট।
- দু’কপি পাসপোর্ট সাইজ ছবি।
- আয়ের প্রমাণপত্র।
এগুলো প্রস্তুত রাখুন। নির্বাচিত হলে ব্যাংক জানাবে।
সোনালী ব্যাংক শিক্ষাবৃত্তি পরিমাণ
বৃত্তির পরিমাণ এককালীন ১০,০০০ টাকা। এটি শিক্ষার্থীদের বই-খাতা কেনা বা অন্যান্য খরচে সাহায্য করে।
কীভাবে বিতরণ হয়
- নির্বাচিতদের তালিকা ওয়েবসাইটে প্রকাশ।
- টাকা সরাসরি অ্যাকাউন্টে জমা।
- এটি ছোট কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ সাহায্য।
সোনালী ব্যাংক শিক্ষা বৃত্তির নিয়ে লেখকের শেষ কথা
আমার মতে, সোনালী ব্যাংক শিক্ষা বৃত্তি একটা চমৎকার উদ্যোগ। এটি শিক্ষার্থীদের স্বপ্ন পূরণে সাহায্য করে। যদি যোগ্য হন, তাহলে দেরি করবেন না। এই বৃত্তি না শুধু টাকা দেয়, বরং আশা দেয়। আমি আশা করি, আরও বেশি শিক্ষার্থী এতে উপকৃত হবে।
প্রায়শই জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন (FAQ)
সোনালী ব্যাংক শিক্ষা বৃত্তি ২০২৫ এর আবেদন কখন শেষ?
আবেদন শেষ হবে ১০ অক্টোবর ২০২৫। অনলাইনে করুন।
সোনালী ব্যাংক বৃত্তির আবেদন যোগ্যতা কী?
২০২৪ সালে এসএসসি বা এইচএসসি পাস, নির্দিষ্ট জিপিএ এবং আয় সীমা।
সোনালী ব্যাংক বৃত্তির পরিমাণ কত?
এককালীন ১০,০০০ টাকা।
উপসংহার
সোনালী ব্যাংক শিক্ষা বৃত্তি একটা আশার আলো জ্বালায়। এই বৃত্তি প্রোগ্রামটি সোনালী ব্যাংকের কর্পোরেট সোশ্যাল রেসপনসিবিলিটি (সিএসআর) এর অংশ হিসেবে চালু হয়েছে। এটি মূলত দরিদ্র কিন্তু মেধাবী শিক্ষার্থীদের উচ্চশিক্ষা গ্রহণে সাহায্য করে।সোনালী ব্যাংক শিক্ষা বৃত্তি একটা দারুণ সুযোগ মেধাবী শিক্ষার্থীদের জন্য। এতে যোগ্যতা, আবেদন প্রক্রিয়া এবং সুবিধা সবকিছু সহজ। ২০২৫ সালের এই প্রোগ্রামটি অনেকের জীবন বদলে দিতে পারে। যদি আপনি যোগ্য হন, তাহলে আজই আবেদন করুন। সোনালী ব্যাংকের ওয়েবসাইটে গিয়ে ফর্ম পূরণ করুন। এতে করে আপনার শিক্ষা যাত্রা আরও সহজ হবে। মনে রাখবেন, শিক্ষা হলো সাফল্যের চাবিকাঠি। আবেদন করুন এবং স্বপ্ন পূরণ করুন!